প্রেম–ভালোবাসা–বিয়ে–সংসার—ইত্যাদি নিয়ে জীবনের বাঁকে বাঁকে সম্পর্ককেন্দ্রিক এমন সব জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, যখন করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তখন প্রয়োজন হয় বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।
পাঠক–দর্শকদের পাঠানো এরকম প্রশ্ন এবং উত্তর নিয়ে প্রথম আলো ডট কমের বিশেষ আয়োজন: LoveGPT
আপনিও যদি সম্পর্কবিষয়ক কোনো জটিলতার মধ্যে থাকেন, তাহলে সুনির্দিষ্ট সমস্যা বা প্রশ্নটি সাবমিট করুন। পরামর্শ দেবেন দেশসেরা মানসিক রোগ–বিশেষজ্ঞ প্যানেল।
আমার বয়স ৩১। অবিবাহিত। আমি গত বছর ভীষণ আবেগময় একটা সম্পর্কে ছিলাম। অনেক ভালো সময় কাটছিল। সম্পর্কটা ঘিরে আগামী কয়েক বছর পর কী করব, তা–ও ঠিক করে ফেলেছিলাম। কিন্তু একটা সময় বুঝতে পারলাম, আমার পার্টনার আমাকে ঠকাচ্ছে। অনুমান নয়, আমার কাছে সেসবের স্পষ্ট প্রমাণ আছে। আমি তার কাছে এসবের ব্যাখ্যা চাইলে তার মধ্যে অনুশোচনা তো দূরের কথা, সে স্বীকারই করত না। আমার কাছে পুরো ব্যাপারটা খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল, তাই দুই মাস আগে আমি সব যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। এরপর সে আমার সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে। আমি কোনো রিপ্লাই করিনি। কিন্তু গত কিছুদিন আগে আমি তার ব্যাপারে আরও কিছু জানতে পারি এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাজেভাবে কয়েকটা মেসেজ করে ফেলি। আমি পরে অবশ্য সেটার জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে একটা মেসেজ লিখেছি এবং তাকে আর যোগাযোগ না করার কথা বলেছি। আমার এই ভীষণ বাজে সময় থেকে উত্তরণে করণীয় কী? পরামর্শ চাই।
আমি সনাতন ধর্মাবলম্বী, বয়স ৩২। মুসলিম ধর্মাবলম্বী এক নারীর সঙ্গে আমার দুই বছর ধরে সম্পর্ক ছিল। সে বিবাহিত। এই দুই বছরে আমাদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। যেহেতু আমরা ভিন্ন ধর্মের এবং সে বিবাহিত, তাই বাস্তবতা মেনে চার মাস হলো আমি অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করেছি। কিন্তু মনটা ওর ওখানে পড়ে আছে। সে আমার অনুপস্থিতিতে তার বান্ধবীর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক জড়িয়ে যায়। এদিকে আমি কষ্ট পাচ্ছি, ওদিকে তার বান্ধবী কষ্ট পাচ্ছে। আমি অনেক অনুরোধ করেও তাকে সে পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারছি না। জিজ্ঞাসা করলে আমাকে বলে, বান্ধবীর স্বামীর সঙ্গে তার এখন আর কোনো যোগাযোগ নেই। কিন্তু আমার মনে হয় সে মিথ্যা বলছে। এগুলো ভাবতে ভাবতে গত সপ্তাহে আমার স্ট্রোক হয়। তার বান্ধবীও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আর সে অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে কথা বলুক, তা আমি সহ্য করতে পারি না। আমি কীভাবে তাকে সে পথ থেকে ফেরাতে পারি?
বান্ধবীর বিয়ের অনুষ্ঠানে এক ছেলের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়, তারপর ফেসবুকে বন্ধু হয়ে যাই। তার পোস্টে লাইক–কমেন্ট এবং মেসেঞ্জারে কথা বলতে বলতে একসময় আমি তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি। তারপর তাকে আমি প্রপোজ করি, সে–ও গ্রহণ করে। তারপর দেখাদেখি, ঘুরতে যাওয়া সব সময় চলছিল। এর মধ্যে আমরা অনেকবার একান্তে সময়ও কাটিয়েছি। সম্প্রতি আমার বাসা থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় আমি তাকে জানাই। তার পর থেকে সে আমাকে ফেসবুকে ব্লক করে দেয়। আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। বান্ধবীকে জানানোর পর বান্ধবী জানিয়েছে, সেই ছেলে বিবাহিত। বান্ধবী আমাকে ছেলেটির বাসার ঠিকানা দিয়েছে। আমি বুঝতে পারছি না, এখন আমি কি সরাসরি তার বাড়িতে যাব?
আমার একটি মেয়ের সঙ্গে এক বছরের সম্পর্ক ছিল। দুজনই চেয়েছিলাম পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়েটা হোক। তাই আমাদের নিজ নিজ পরিবারকে জানাই। একটি কারণে দুই ফ্যামিলিই আমাদের সম্পর্কে প্রথমে আপত্তি করলেও পরে আমাদের চেষ্টায় তাদের রাজি করাই। ওই মেয়ের বাড়িতে আমার পরিবার কথা বলতে যায় এবং বছরখানেকের মধ্য বিয়ে হওয়ার ব্যাপারে মৌখিকভাবে কথা দিয়ে আসে। এর কয়েক মাস পর হঠাৎই মেয়েটি আমাকে জানায়, সে আর এই বিয়েতে রাজি নয় এবং আমার সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তার মা-বাবাকেও এই বিয়েতে অসম্মতি জানায়। আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে দুই পরিবারের আত্মীয়স্বজন সবাই জানতেন এবং শিগগিরই আমাদের এনগেজমেন্ট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ মেয়েটির এমন অস্বাভাবিক আচরণের কারণে আমি ও আমার পরিবার এবং মেয়েটির পরিবারও অবাক হয়ে পড়ি। মেয়েটির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের ঝগড়া বা মনোমালিন্য ছিল না। তারপরও তার এমন অতর্কিত সিদ্ধান্তে আমি মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়ি। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত আমি অত্যন্ত ডিপ্রেশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। করণীয় কী?
আমি একজন পুরুষ, বয়স ২৬ বছর। ছোটবেলায় গাছে চড়তাম, আস্তে আস্তে বাদ দিয়েছি। কারণ, কয়েক বছর ধরে আমার ভেতরে শূন্যভীতি বা জিরো ফোবিয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এখন ছাদে উঠতেও ভীষণ ভয় লাগে, গা কাঁপে, মাথার ভেতর অদ্ভুত অনুভূতির সৃষ্টি হয়। বহুতল ভবনে কোনো রুমের ভেতরে থাকলেও পড়ে যাওয়া বা ভেঙে পড়ার ভয় কাজ করে। সিঁড়ি দিয়ে ভয় নিয়ে উঠতে পারলেও নামতে গিয়ে লেজেগোবরে করে ফেলি। কয়েক বছর আগে এক বন্ধুর সঙ্গে ছোট একটা রেলব্রিজের মাঝামাঝি যাওয়ার পর সামনে বা পেছনে কোনো দিকেই যেতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল আমার হাত–পা ভারী হয়ে গেছে। প্রচুর ঘামতে থাকি। বন্ধুর সাহায্যে সেবার কোনোমতে উতরে যাই। তার পর থেকে আর রেললাইনেও যাই না। এই ভীতি কাটানোর জন্য আমার কী করা উচিত?
একদিন এক মেয়েকে হঠাৎ দেখে আমার ভালো লেগে যায়। মেয়েটির সঙ্গে আর হয়তো জীবনে দেখা হবে না। আর হয়তো এমন হঠাৎ দেখার সুযোগও আসবে না। তাই সারাক্ষণ মাথায় ঘুরেফিরে ওই একটা প্রশ্নই বারবার আসে, কেন তাকে আমি আমার মনের কথা বলতে পারলাম না। ভালোবাসার কথা বলতে না পেরে কষ্টে আছি। এখন আমি কী করব?
আমি একজন ছেলে। আমার বয়স ২৮। আমি আরেকজন ছেলেকে ভালোবাসি, যা মননে ও শরীরে। এই অদ্ভুত ভালোবাসায় আবদ্ধ হওয়া ব্যক্তি আমিই প্রথম নই, তা কমবেশি সবাই জানেন। মহাভারতের শিখণ্ডী–ভীষ্ম থেকে আজকের রিকি মার্টিন–জোয়ান ইউসুফের প্রণয়ের কথা অনেকেই জানেন। ভালোবাসা দিবসে আমাদের ভালোবাসার কথা কেন প্রকাশ পায় না? দিন দিন নিজেদের আমরা আরও গুটিয়ে নিচ্ছি। সমাজ যেন আমাদের সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে, সে ব্যাপারে উদ্যোগ চাই। পাসপোর্টে স্পাউসের জায়গায় আমার ভালোবাসার মানুষের নাম থাকুক। তাকে নিয়ে উড়ে যেতে চাই অনেক দূরে।
প্রেমের কথা পরিবারকে কীভাবে জানাব?
আমি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে বর্তমানে কৃষি ডিপ্লোমাতে তৃতীয় সেমিস্টারে পড়ছি। একজনকে ভালোবাসি। তার পরিবার বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছে অন্য ছেলের সঙ্গে। আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। আমার পরিবারকেও এই মুহূর্তে ওর ব্যাপারে কিছু জানানো সম্ভব নয়। ওকে ছাড়া বেঁচে থাকাটা মুশকিল হবে। এ অবস্থায় কী করব?
আমি আমার এক বান্ধবীকে পছন্দ করি, কিছু কিছু সময় মনে হয় সে–ও আমাকে পছন্দ করে। আমরা দুজনই দশম শ্রেণিতে পড়ি। থাকিও একই এলাকায়। আমি তাকে আমার পছন্দের কথা জানাতে চাই, বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে সাহস পাই না। কী করব, পরামর্শ চাই।
পেশাগতভাবে আমি একজন ইঞ্জিনিয়ার। একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করি। আমার স্ত্রী হাউসওয়াইফ, সে বাংলায় মাস্টার্স করেছে একটি স্বনামধন্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমাদের প্রেম করে বিয়ে। বিয়ের আগে প্রায় দেড় বছর সম্পর্ক ছিল। এই দেড় বছর সময়ে সে অত্যন্ত ধৈর্যশীল এবং ভালো ব্যবহার করত। বিয়ের পর সে পুরো পাল্টে গেছে। এখন কথায়–কথায় ঝগড়া, গালাগালি, মা–বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। অনেক সময় আমার গায়ে হাতও তোলে। সবকিছুই এক্সট্রিম লেভেলে না নিয়ে গেলে তার শান্তি হয় না। বিয়ের প্রায় দুই বছর, এর মধ্যে সে তার শ্বশুরবাড়ি, অর্থাৎ আমার বাবার বাড়ি রংপুরে গেছে মাত্র তিনবার। বিয়ের শুরুর এক বছর আমরা চট্টগ্রামে ছিলাম, পরে মাস ছয় হলো ঢাকায় এসেছি এবং আমার ভাইয়ের বাসার পাশেই বাসা নিই। কিন্তু এখনো সে একবারের জন্যে ভাইয়ার বাসায় যায়নি। এমন অবস্থায় সাংসারিক শান্তির জন্য, সম্পর্কটাকে স্বাভাবিক রাখার জন্য কী করা উচিত?
সংসার মোটামুটি ভালোই চলছিল! মাঝে হঠাৎ ২০২১ সালে তার (এসএসসি) অ্যাসাইনমেন্ট লেখার জন্য মায়ের কাছে যায়, রেগুলার কথা হতো, মাঝে তার পরিবর্তন খেয়াল করি! (আর আমিও আমার ক্যারিয়ার নিয়ে প্যারায় ছিলাম, আইএল টেস্ট দিয়ে বাইরে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল! তার জন্য আমিও তার সঙ্গে তার মায়ের বাসায় যেতে পারিনি!) হঠাৎ তার পরিবর্তন আমাকে ভাবায়! পরে তার কললিস্ট চেক করে দেখি, আমাদের বাসা থেকে যাওয়ার পর সে জাস্ট তিন-চার দিন পর রেগুলার একটা নম্বরে কথা বলে! পরে তাকে জিজ্ঞেস করলে বলে, তার ফ্রেন্ডের নম্বর! পরে আমি তার ফ্রেন্ডের মাধ্যমে জানতে পারি, সে নাকি নতুন রিলেশন শুরু করেছে! এটা শুনে আমার মাথা হেঁট হয়ে গেল! যে আমি কখনোই স্মোক করিনি, সেই আমি স্মোক শুরু করলাম! যদিও এখন আর করি না! লাস্ট ইয়ারে তারা বিয়ে করে ফেলেছে! যদিও সে এখনো আমাকে ডিভোর্স লেটার দেয়নি বা আমিও দিইনি! সে নতুন করে সংসার শুরু করেছে! (ভেতরে অনেক কথা রয়েছে, ই–মেইলে এত লেখা পজিবল নয়!) কিন্তু আমি এখনো সিঙ্গেল! (বলে রাখা ভালো, তার মা সব জানত! তার মায়েরও তৃতীয় সংসার চলছে!) সে তার ১৭ বছরে ৩টি বিয়ে অলরেডি করে ফেলেছে! আমার সঙ্গে ডিভোর্স না হওয়ার কারণ সম্ভবত বয়সজনিত সমস্যা হতে পারে! যার জন্য সে মনে হয় ডিভোর্স লেটার দিতে পারনি; কারণ, রেজিস্ট্রি নাকি দুবার হয়! যাহোক, সে হয়তো আমাকে ইউজ করেছে! কিন্তু আমি তাকে অনেক অনেক ভালোবেসেছিলাম! এখনো আমি সেই ট্রমা থেকে বের হতে পারছি না! অলওয়েজ তার কথা মনে পড়ে! রিসেন্টলি আমি আমার পূর্বের রুম চেঞ্জ করেছি! তারপরও মন থেকে কিছুতেই তাকে মুছতে পারছি না! তার কথা, হাঁটা, অঙ্গভঙ্গি—সবকিছুই চোখের সামনে ভাসে! এখন আমি কী করব? কীভাবে এখান থেকে বের হব? যদি সঠিক কোনো সাজেশন দিতেন, ভালো হতো!
আমার বয়স ২৫। অবিবাহিত। চাকরিজীবী। দুই বছর আগে আমার ব্রেকআপ হয়ে গেছে। এখন আমার যেকোনো মেয়েকে দেখলে ভালো লাগা কাজ করে, কিন্তু সাহস পাই না কিছু বলতে। মনে হয় সবাই ওর মতোই বিশ্বাসঘাতক। এখন আমি কী করতে পারি?
আমি একটি যৌথ পরিবারের বড় ছেলের বউ। আমি এই সংসারের জন্য দিন–রাত কাজ করি। সবাই আমাকে ভালোভাবে নেয়। কিন্তু আমার শাশুড়ি মনে করেন, আমি সংসারের কর্তৃত্ব খাটাচ্ছি, নিজেকে অনেক কিছু মনে করছি। উনি আমার প্রতিটি বিষয়ে ভুল ধরার জন্য বসে থাকেন, মুরব্বি দেখে আমি কিছু বলতেও পারি না। এ অবস্থায় আমি আলাদা হতে চাইছি, কিন্তু আমার স্বামী আমাকে ধৈর্য ধরতে বলছেন। আমি আমার শাশুড়িকে আর নিতে পারছি না। কী করব?
‘সম্পর্ক’ শব্দটি কীভাবে ব্যবহার করা যায়? কীভাবে দুজন অপরিচিতকে পরিচিত হতে বা ধরে রাখা যায় পরিচিত কে?